১২ জুলাই ২০১৬

Dilip Poddar

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুখবর বিশেষ খাদ্য-নিয়ন্ত্রণে টাইপ ২ সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব।




ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুখবর বিশেষ খাদ্য-নিয়ন্ত্রণে টাইপ ২ সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব।





Bowl-of-Salad newdisa

ডায়াবেটিস একটি যাবৎজীবন রোগ, এ-ধারণাকে উল্টে দিয়ে ব্রিটেইনে একটি গবেষণার ফল দেখাচ্ছে যে, দু’মাস ধরে বিশেষ খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব। শুক্রবার আমেরিকান ডায়াবেটিস এসৌসিয়েশনের কনফারেন্সে উপস্থাপিত ইংল্যান্ডের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল উল্লেখ করে উপরোক্ত দাবীটি করেন।
উল্লেখ্য, সরকারী হিসাব-মতে যুক্তরাজ্যে প্রায় আড়াই মিলিয়ন ডায়েবেটিস রোগী সনাক্ত করা আছে, যার মধ্যে সিংহভাগই হচ্ছেন টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রন্ত এবং এতোকাল পর্যন্ত ধারণা করা হতো এটি একটি যাবৎজীবন রোগ, যা নিয়ন্ত্রণ করা হলেও সম্পূর্ণ সারানো সম্ভব নয়।
কিন্তু নিউক্যাসলের এ-গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, কোনো ওষুধ ব্যবহার করে নয়, বরং খাদ্য-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ-রোগ থেকে পূর্ণ-মুক্তিলাভ করা সম্ভব।
‘ডায়েবেটিস ইউকে’র আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এ-গবেষণায় ডায়েবেটিসগ্রস্ত ১১ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদেরকে দু’মাস যাবৎ প্রতিদিনের গৃহীত খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করে ৬০০ ক্যালোরীতে নামিয়ে আনা হয়। তিন মাস পর দেখা যায় ১১ জনের মধ্যে সাতজন ডায়াবেটিস থেকে মুক্তিলাভ করেছেন।
গবেষণার পরিচালক নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর রয় টেইলর বলেন, ‘টাইপ-২ ডায়াবেটিস সক্রান্ত আমাদের ধারণায় এটি একটি মৌলিক পরিবর্তন। নতুন করে যাদেরকে ডায়াবেটিসগ্রস্ত বলে শনাক্ত করা হবে, তাদের কাছে আমরা রোগটি কীভাবে ব্যাখ্যা করবো, এ-গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের কারণে তা সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হবে ’।
তিনি বলেন, ‘আগে যেখানে বিশ্বাস করা হতো টাইপ-২ ডায়াবেটিস যার আছে, তা তার জীবনভরই থাকবে এবং অনড়ভাবে খারাপের দিকে যাবে। কিন্তু আমরা দেখিয়েছি যে আমরা অবস্থাকে উল্টাতে পারি’।
উল্লেখ্য, দু’প্রকারের ডায়াবেটিসের মধ্যে টাইপ-২ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা দেয় রক্তে অত্যধিক গ্লুকৌজের কারণে। আর টাইপ-১ দেখা যায় সচরাচর শিশুদের মধ্যে, যাদের দেহ খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ইনস্যুলিন তৈরী করতে পারে না বলে। তাই এদের প্রতিদিন ইনস্যুলিন ইঞ্জেকশনের দরকার হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, ডায়েট ড্রিংক ও অ-শ্বেতসার সব্জি সমন্বিত চরম লঘু-ক্যালোরির খাদ্য প্যানক্রিয়াসে আটকে থাকা চর্বিকে সরিয়ে পুনরায় ইনস্যুলিন তৈরী জন্য শরীরকে সক্রিয় করে।
এ-গবেষণায় একটি চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে যে ১১ রোগীর উপর বিশেষ খাদ্য-নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করা হয়, তাদের মধ্যে পরিবর্তন হয় কি-না বুঝার জন্য নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভুত সমান সংখ্যক ও সম-রোগের তুলনা-দল ব্যবহার করা হয়।
মাত্র এক সপ্তাহ পর দেখা যায়, বিশেষ খাদ্য-নিয়ন্ত্রণে থাকা রোগীদের সকালের নাস্তাপূর্ব রক্ত-পরীক্ষায় সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ-রোগীদের উপর এমআরআই স্ক্যান করে দেখা যায় যে, প্যানক্রিয়াসে চর্বি স্বাভাবিক মাত্রা ফিরে এসেছে। এবং প্যানক্রিয়াস ইনস্যুলিন তৈরী ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে।
এভাবে বিশেষ খাদ্য নিয়ন্ত্রণের আট সপ্তাহ পূর্ণ হবার পর অংশগ্রহণকারীরা তাদের স্বাভাবিক খাদ্য ফিরে যান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পরিমাণ সম্পর্কে পরামর্শ লাভ করেন।
ডায়াবেটিস ইউকে'র ডাইরেক্টর অফ রিসার্চ ইয়ান ফ্রেইম বলেন, ডাক্তারের পরামর্শ ও সাহায্য ছাড়া এ-রকম খাদ্য-নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এ-গবেষণার ফলাফলকে স্বাগত জানাই, কারণ এটি দেখিয়েছে যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস উল্টানো সম্ভবও যা কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া অস্ত্রোপচারের মতো।’
তবে তিনি বলেন, ‘যা’হোক, এই খাদ্য-নিয়ন্ত্রণ সহজ কর্ম নয় এবং ডায়াবেটিস ইউকে কঠোর সুপারিশ করে চিকিৎসকদের তত্ত্ববধান ছাড়া এটি করা উচিত নয়।’

Dilip Poddar

About Dilip Poddar -

He is 25 year old geeky nerd from a little town in India. He is an avid Blogger, Web Designer and Freelancer. He is mostly interested in SEO and playing with codes.our New Blogger ko hamesha honest ka sath help karte.

Subscribe to this Blog via Email :