এই লক্ষণগুলি থাকলে আপনি কখনই বড়লোক হতে পারবেন না।
মার্কিন লেখক এবং মিলিয়নেয়ার স্টিভ সিবোল্ড তাঁর বইতে লিখেছেন, 'রোজগার করার সুযোগ প্রত্যেকের কাছে সমানই থাকে। তবে কেউ সেটাকে কাজে লাগায় কেউ লাগায় না।' আপনি কাজে লাগাচ্ছেন? আপনার মাস গেলে যে রোজগার হয় তাতে আপনি খুশি? আপনি বড়লোক হতে চান? প্রশ্ন গুলো প্রত্যেকের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। বড়লোক কে না হতে চায় বলুন! তবে চাইলেই তো হওয়া যায় না। বিশেষ করে যদি এই লক্ষণগুলি আপনার মধ্যে থাকে তবে সেটা স্বপ্নই থেকে যাবে। লক্ষণগুলির সঙ্গে আপনি নিজেকে মেলাতে পারেন, তবে অবিলম্বে পাল্টে ফেলুন।
দেখে নিন কী কী সেই লক্ষণগুলি:
১) আয় না বাড়িয়ে সঞ্চয়ের দিকেই জোর: সঞ্চয় করা সম্পদ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান শর্ত। তবে শুধু সঞ্চয়ের দিকে মন দিলে হবে না। তার সঙ্গে রোজগার বাড়ানোর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। রোজগার বাড়লেই সঞ্চয় বাড়াতে পারবেন।
২) বিনিয়োগে অনীহা: বাংলায় একটা প্রবাদ আথে, টাকায় টাকা টানে। একদম ঠিক কথা। আপনার কাছে টাকা না থাকলে আপনি তা বাড়াবেন কী করে! আর শুধু থাকলেই হবে না, তা বাড়াতে জানতেও হবে। আর তার জন্য বিনিয়োগ খুবই প্রয়োজন। যাঁরা শুধু জমিয়ে যান, বিনিয়োগ করেন না, তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির হার খুবই কম হয়। টাকা বাড়াতে হলে তা বিনিয়োগ করতে হবে। সেটাও দীর্ঘ মেয়াদী।
৩) বেতনেই খুশি: মাস গেলে ব্যাঙ্কের একটা মধুর এসএমএস। বেতন আপনার অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে। ব্যস আপনি গদগদ হয়ে গেলেন। যদি বড়লোক হওয়ার বাসনা থাকে, তবে শুধু বেতনে খুশি হলে চলবে না। সঙ্গে সঙ্গে অন্য কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখবেন, বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। তাই নিজের উদ্যোগে কিছু করুন।
৪) সাধ্যের বাইরের জিনিস কেনা: বেতন বা রোজগারের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে জিনিসপত্র কিনতে শুরু করলেন। ভাবলেন, 'কোনও পরোয়া নেই, EMI আছে তো!' সে আছে ঠিকই, কিন্তু টাকা তো আপনিই মেটাচ্ছেন। একটা কথা মনে রাখবেন, দরকার ছাড়াও যদি আপনি অযথা জিনিসপত্র কেনেন, তবে শীঘ্রই আপনার দরকারি জিনিসপত্র বেচতে হতে পারে।
৫) অন্যের স্বপ্ন গড়ছেন আপনি: ছোটবেলায় বাবা-মা, বড় হওয়ার পর স্ত্রী বা সন্তান, অফিসে বস বা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ, এই সকলের স্বপ্নের বোঝা আপনার কাঁধে। আপনি তা নিরন্তর বয়ে বেড়াচ্ছেন। যদি এমনটা হয় তা হলে ভবিষ্যত্ ভালো নয়। নিজে যেটা করছেন, সেই কাজকে ভালোবাসুন, বা ভালোবাসার কাজকে বেছে নিন। তা হলে কাজকে কাজ মনে হবে না। তাই অভ্যাস পাল্টান, জীবন পাল্টে যাবে।
৬) কমফোর্ট জোন ছাড়ব না: যা খুশি হয়ে যাক নিজের কমফোর্ট জোন ত্যাগ করব না। এটা একেবারে মার্কামারা মধ্যবিত্ত মানসিকতার লক্ষণ। টাকা রোজগার করতে হলে আপনাকে কষ্ট তো করতে হবেই। তাই মানসিক এবং শারীরিক স্বাচ্ছন্দের কথা ভাবলে রোজগার করবেন কী করে!
৭) কোনও পরিষ্কার চিন্তাধারা নেই: ব়ডলোক হতে চান, টাকাও রোজগার করতে চান, কিন্তু তার জন্য কোনও পরিষ্কার ধারণা বা চিন্তাধারা নেই। চলবে না। টাকা এমনি বাড়ে না। তার জন্য পরিশ্রম করতে হয়। সঙ্গে পড়াশোনা এবং পরিষ্কার চিন্তাভাবনার প্রয়োজন। যদি ধারণা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকে, তবে সম্পদ বাড়ার বদলে কমে যেতে পারে।
৮) আগে খরচ পরে সঞ্চয়: মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একগুচ্ছ বিল। মোবাইল থেকে ট্যাক্স, বিদ্যুত্, বাজার-হাট, আরও কত কী! সে সব মেটানোর পর সারা মাস একটা হাত খরচ। এ সব করে যদি বাঁচে তা হলে সঞ্চয়, নয় তো পরের মাসের অপেক্ষা। সব থেকে বড় ভুল করছেন। মাসের প্রথমেই বাকি সব বিলের মতো সঞ্চয়কেও একটা বিল মনে করুন। রোজগারের অন্তত ১০ শতাংশ আলাদা করে সরিয়ে অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে রেখে দিন। আর মনে করুন, ওটা আপনার টাকা নয়। এটাও একটা অভ্যাস। না করলে ভবিষ্যতে অনেক বড় সমস্যায় পড়বেন। বড়লোক হওয়া তো দূরস্থান।
৯) 'বড়লোক হওয়া আমার কম্ম নয়': মনে যদি এই ধারণা পোষণ করেন, তবে সত্যিই পারবেন না। সিবোল্ড লিখছেন, 'মধ্যবিত্ত মানসিকতার লোকজন সব সময় এটা ভাবেন বড়লোক হওয়া শুধু ভাগ্যবান মানুষের কপালেই থাকে।' এই মানসিকতার কারণেই তাঁরা পিছিয়ে থাকেন। অধ্যাবসায়, পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতাও থাকা প্রয়োজন। না হলে পারবেন না।
লেখাটি কেমন লাগলো কমেন্ট করুন।