ফেসবুকে বেশি সময় থাকলে যে শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে
ফোনে দু-মিনিট কথা বলে নিলে যেখানে ঝামেলা চুকে যেত, তা না করে টেক্সটিং চলতে থাকে অবিরাম ৷ উত্তর পেতে দেরি হলে বাড়ে স্ট্রেস৷ আবার মুখোমুখি কথা না বললে হাবে-ভাবে, গলার স্বরে, চোখের চাহনিতে যে ভাবের আদান-প্রদান, তার সুখ বা সুবিধে পাওয়া যায় না বলে ভুল বোঝাবুঝি, টেনশন বাড়লেও অনেক সময় তা অধরা থেকে যায়৷ তা থেকেও স্ট্রেস হতে পারে৷ কাজের দুনিয়াতেও তাই৷ মেইলে গুরুতর থেকে সাধারণ মতের আদান-প্রদান৷ কথার বিকল্পে টেক্সটিং৷ ঘুমের সময়ও খোলা থাকে হোয়াটস অ্যাপের দরজা৷ ফলে ৮-৯ ঘণ্টার কাজের সময় এগোতে এগোতে ১২-১৪ ঘণ্টা ছাড়িয়ে যায়৷ টান পড়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কে৷ আবার যাঁর টেকনোলজি ফোবিয়া আছে, এতো কিছুর সঙ্গে মানিয়ে চলা সম্ভব হয় না তাঁর পক্ষে৷ তার হাত ধরে বাড়ে তাঁর স্ট্রেস ও উদ্বেগ৷ সাম্প্রতিক গবেষণা বলে ডিজিটাল স্ট্রেসের সব চেয়ে বড়ো কারণ হলো টেকনোলজি ফোবিয়া৷ সবাই সব কিছু শিখে নিল, আর আপনি পিছিয়ে রইলেন এই মনোভাব থেকে মারাত্মক স্ট্রেস হতে পারে৷ এই স্ট্রেস কাটাতে চাইলে প্রথমেই বুঝে নিন, যে ব্যাপারগুলো কঠিন কিছু নয়৷ চাইলেই শিখতে পারবেন৷ কিন্ত্ত এতটুকু চাইবেন বা আদৌ চাইবেন কিনা সেটা আপনার ব্যাপার৷ সব চেয়ে ভালো হয় কাজের বা আনন্দের জন্য যতোটুকু দরকার, ততোটুকু শিখে নিলে৷ ট্রেন্ডি হওয়ার লোভে বাজারে আছে বলেই লেটেস্ট মোবাইল বা আইপড কিনে হাবুডুবু খেয়ে কাজ নেই৷ দরকার নেই সব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নাম লেখানোরও৷ তার চেয়ে পুরোনো ধাঁচে জীবনকে উপভোগ করার চেষ্টা করলেই বরং ভালো হবে৷ ভারচুয়াল নয়, বাঁচুন রিয়েল ওয়ার্ল্ডেঃ আসল জগত্ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেবেন না৷ টেকনোলজির বাইরেও নিজেকে ছড়িয়ে দিন৷ টেকনোলজির সৃষ্টি হয়েছে জীবনযাপন সহজ করার জন্য৷ কিন্ত্ত তার বদলে যদি জীবন কঠিন হয়ে যায়, মানসিক অশান্তি শুরু হয়, বুঝতে হবে আপনি ব্যাপারটাকে হ্যান্ডেল করতে পারছেন না৷ কাজেই আজ থেকেই নিয়ম করে কাজের সময় ও ব্যাক্তিগত সময়কে আলাদা করে নিন৷ কলিগদের জানিয়ে দিন যে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আর আপনাকে পাওয়া যাবে না৷ প্রয়োজনে একটাআলাদা ফোন রাখুন যেখানে নেহাত্ ইমার্জেন্সি ছাড়া কেউ ফোন করবেন না৷ রিল্যাক্সেশনের সময়ে ই-মেল বা টেক্সট পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে চেক করতে৷ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ই-মেলে না করে সামনাসামনি বসে করুন৷ কম সময়ে, ভুল বোঝাবোঝি এড়িয়ে সমাধানে পৌঁছোতে পারবেন৷ ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও টেক্সিং বা মেলের চেয়েঅনেক দামী হলো সামনে বসে কথা বলা৷ কোথায়, কখন মিট করবেন বা কী নিয়ে আলোচনা হবে তা ঠিক করতে না হয় টেকনোলজির সাহায্য নিন, কিন্ত্ত মূল কথাবার্তা হোক মুখোমুখি বসে৷ এতে স্ট্রেস কমবে৷ সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে৷ হপ্তাহান্তে এক দিন বা অন্তত এক বেলা টেকনোলজির সঙ্গে যথাসম্ভব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে যা করতে ভালোলাগে তাই করুন৷ জিমে গা না ঘামিয়ে খোলা জায়গায় মর্নিং ওয়াক করুন৷ কানে আইপডের তার না গুঁজে ভোরের আওয়াজকে আপন করে নিন৷ ফ্যামিলি টাইম ও মি-টাইমের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ নয়৷ একঘণ্টা দু-ঘণ্টা, যতোটুকু সময়ই রাখুন এ বাবদ, তা যেন কম্পিউটার বা মোবাইল ফ্রি থাকে যথাসম্ভব৷ নেটে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বই পড়াও বই পড়াও বজায় রাখুন৷ বিছানায় যাওয়ার অন্তত দু-এক ঘণ্টা আগে থেকে নেট, মোবাইল সব বন্ধ করে দিন৷ অনিদ্রার হাত থেকে মুক্তি পাবেন৷ কাজের খুব ক্ষতি হয়তো হবে না তাতে৷ মনে রাখুনঃ ১ .মূল কথাবার্তা হোক মুখোমুখি বসে৷ এতে স্ট্রেস কমবে ২. ফ্যামিলি টাইম ও মি-টাইমের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ নয় ৩. নেটে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বই পড়াও বজায় রাখুন ৪. বিছানায় যাওয়ার অন্তত দু-এক ঘণ্টা আগে থেকে নেট, মোবাইল সব বন্ধ করে দিন ৫. অন্তত এক বেলা টেকনোলজির সঙ্গে যথাসম্ভব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে যা করতে ভালোলাগে তাই করুন